
২০২২-০৫-০২ ০২:২৮:১০ / Print
লাগামহীন মাংসের বাজার। নালিতাবাড়ী শহরে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে খাসির মংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ৯৮০ টাকায়। কাল থেকে মাংসের দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, মাংসের বাজার সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। ঈদ উপলক্ষে চাঁদাবাজি বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম বেড়ে গেছে। এজন্য মাংসের দামও বেড়েছে।
তারাগন্জ দক্ষিণ বাজার মাংস কিনতে আসা মোক্তার মিয়া বলেন, সাধারণত প্রতি বছর ঈদের আগে ও ঈদের দিন মাংসের দাম বেড়ে যায়। এ বছরও বেড়ে যেতে পারে। এজন্য আগে থেকেই মাংস কিনে রাখছি। এমনিতেই এ বছর আগে থেকেই মাংসের দাম অনেক বেশি। দাম বেশি থাকায় প্রয়োজনের তুলনায় কম মাংস কিনেছি। বাজারে মাংস কিনতে আসা জুয়েল বলেন, কয়েক দিন আগেও গরুর মাংসের দাম ৬৫০ টাকা ছিল। একদিনের ব্যবধানে ৭০০ টাকা হয়ে গেছে।
সামনের দিনগুলোতে আরও বেড়ে যেতে পারে। এ বছর এমনিতেই মাংসের দাম অনেক। খাসির মাংসের দামও বেড়েছে। ৯৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মাংস কিনতেই সব টাকা ফুরিয়ে যাচ্ছে। আসলে না কিনেও উপায় নেই। ঈদে তো মাংস ছাড়া চলে না। তিনি বলেন, সরকার বলে আমাদের দেশে পর্যাপ্ত গরু উৎপাদন হয়। তবে কেন আমাদের এত দাম দিয়ে মাংস কিনে খেতে হবে? ব্রীজের পূর্বপাশে বাজারে মাংস কিনতে আসা বিল্লাল হোসেন বলেন, মাংসের দাম বেশি নেয়া হচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে ৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। মাংস ব্যবসায়ীরা যে সেন্ডিকেট করেছে দাম আরও বাড়তে পারে ।
এদিকে মাংস বিক্রেতারা বলছেন, অনেক আগে থেকেই গরুর মাংসের বাড়তি দাম রয়েছে। এত দিন কোথাও ৬৫০ কিংবা কোথাও ৬৮০ টাকায় আবার কোনো কোনো দোকানে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে । কিন্তু এখন বেশির ভাগ দোকানেই ৭০০ টাকার নিচে মাংস পাওয়া যাচ্ছে না। ঈদের বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এমনটা হয়েছে বলে জানান তারা।
আড়াইআনী বাজারের এক মাংস বিক্রেতা বলেন, ঈদ উপলক্ষে গরুর দাম বেড়ে গেছে। কয়েক দিন আগেও আমার দোকানেই ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। কিন্তু এখন ৬৮০ টাকা কেজিতেও বিক্রি করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে চাঁদাবাজি বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম বেড়ে যায়। চাঁদার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপারীরা গরুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ব্যাপারীদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনলে খুচরায় কমে বিক্রির কোনো সুযোগ নেই।
অন্যদিকে গরু-খাসির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্রয়লার ও দেশি মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগির দাম ২০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং ৫০ টাকা বেড়ে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৬০০ টাকায়। মাংসের বাজারে গিয়ে স্বস্তি পাচ্ছেন না ক্রেতারা।
এক বছরের ব্যবধানে মাংসের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। ২০২১ সালের একই সময়ে গরুর মাংস কেজিপ্রতি দাম ছিল ৫৬০ থেকে ৬০০ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ১৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। খাসির মাংস কেজিপ্রতি বিক্রি ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকা। এক বছর আগেও কেজিপ্রতি খাসির মাংস বিক্রি হয় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়।
মাংসের বাজার সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় বেশি দাম দিয়ে মাংস কিনে খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। এর পিছনে রয়েছে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন ও ভারতীয় একটি চক্র। ভারত থেকে মাংস আমদানি করে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় মাংস ও পশু আমদানির প্রতিবাদ হচ্ছে না। মাংসের দাম নিয়ে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো মন্ত্রণালয় কারো সঙ্গে আলোচনাও করে না। মাংসের বাজারদর ও স্বাস্থ্যসম্মতর বিষয় দেখাশোনার কেউ আছে বলে মনে হয় না। বাজারে জবাই হচ্ছে প্রতিদিন অনেক গরু নেওযা হচ্ছেনা প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে কোন সনদ,সুস্থ এবং অসুস্থ জবাই করে এক সাথেই বিক্রি হচ্ছে দেখার কেউ নেই ।
বাংলাদেশ শিক্ষা/জাআ