ঢাকা, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩

যে জন্য সংশোধিত বই পাবে না শিক্ষার্থীরা

অনলাইন ডেস্ক

২০২৩-০৪-৩০ ১৫:২১:০৭ /

ফাইল ছবি

দেশে নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ২২টি বইয়ের ৪২১টি ভুলভ্রান্তি ও অসঙ্গতির তথ্য প্রকাশ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। একই সঙ্গে নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা বইয়ের সাতটি ভুল উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ভুলের সংশোধনী দিয়ে সম্প্রতি ছয়টি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু সঠিক তথ্য সংবলিত সংশোধিত কোনো বই বা কোনো শিট বিতরণ করা হবে না ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে।

ফলে শিক্ষার্থীদের নির্ভুল তথ্য জানা নিয়ে সংশয় থেকেই গেল। তথ্যমতে, পাঠ্যবইয়ের এই সংশোধনীগুলো এনসিটিবির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এখন শিক্ষা অধিদফতরগুলোর মাধ্যমে তা জেলা-উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে। তাঁরা বিদ্যালয়গুলোতে এসব সরবরাহ করবেন। এ ছাড়া অধিদফতরের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা সংশোধনীর তালিকা পেয়েছেন। শ্রেণি শিক্ষকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বইয়ে তা সংশোধন করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ।

সারা দেশের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি এনসিটিবির জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাঠ্যপুস্তকের ভুলের এই সংশোধনীগুলো সংশ্লিষ্ট শ্রেণি শিক্ষকের মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পাঠ্যপুস্তকে সংযোজন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম গতকাল প্রতিবেদককে বলেন, সংশোধনীর বিষয়গুলো আমরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদফতরকে জানিয়েছি। এই অধিদফতরগুলোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে সংশোধনীগুলো পৌঁছে গেছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের বইয়ের এসব ভুলের সংশোধন করে দেবেন।

তথ্যমতে, ষষ্ঠ শ্রেণির ১১ বিষয়ে ২০১টি ভুলের সংশোধনী দিয়েছে এনসিটিবি। এর মধ্যে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে দেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বেশি সংশোধনী ৭০টি, আর সবচেয়ে কম বাংলা বইয়ে ৪টি। এ ছাড়া ইংরেজি বইয়ে ৩৫, গণিতে ৫, বিজ্ঞানে ৭, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ৩৬, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ১, জীবন ও জীবিকায় ১৫, শিল্প ও সংস্কৃতিতে ৫, ইসলাম শিক্ষায় ৭ এবং হিন্দু শিক্ষা বইয়ে ১৬টি সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। আর সপ্তম শ্রেণির ১১ বিষয়ে ২২০টি ভুলের সংশোধনী দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে সবচেয়ে বেশি ৬৫টি ভুলের সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। বাংলা বইয়ে ২০, ইংরেজিতে ১১, গণিতে ২৩, বিজ্ঞানে ৪, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২৫, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ৫, জীবন ও জীবিকায় ২৮, ইসলাম শিক্ষায় ৯ এবং হিন্দু শিক্ষা বইয়ে ১২টি সংশোধনী দিয়েছে এনসিটিবি। দেখা গেছে, দুই শ্রেণিতে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে ভুলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। অধিকাংশ বইয়ে ভুলগুলোর মধ্যে বানান ভুলের পরিমাণ বেশি। এনসিটিবি সূত্র জানায়, বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষক সহায়িকারও সংশোধনী প্রকাশ করেছে এনসিটিবি।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, সংশোধিত বই বা শিট ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা না হলে এই সংশোধনী কোনো কাজে আসবে না। কারণ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকরা যথাযথভাবে এই সংশোধনীর নির্দেশনা দিতে পারবেন না। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরাও ক্লাসরুমে থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এই সংশোধন করে নেবে না। এনসিটিবির ওয়েবসাইটে সংশোধনী প্রকাশ করা হয়েছে, কিন্তু এই ওয়েবসাইট দেখে দেখে শিক্ষার্থীরা পড়বে না বলেও মত দেন শিক্ষাবিদরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান গতকাল প্রতিবেদককে বলেন, এসব সংশোধনী লোক দেখানো, প্রচারণা মাত্র।

এগুলো বাস্তবে কোনো কাজে আসবে না। কারণ, সংশোধিত বই না দিলে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়বে কী? শ্রেণি শিক্ষকরা সংশোধনী দেখে দেখে মিলিয়ে মিলিয়ে তো পড়াবেন না। জোড়াতালি দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় এখন জড়াখিচুড়ি পরিস্থিতি চলছে। এভাবে শিক্ষা চলে না। এ শিক্ষাবিদ আরও বলেন, ভবিষ্যতে পাঠ্যবইয়ে এমন ভুল যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যোগ্য ব্যক্তি দিয়ে বই লেখানোর কাজ করতে হবে। পুরো কারিকুলাম চালু করে নির্ভুল বই লিখতে হবে। 

বিডি শিক্ষা/জাআ

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

যে কারণে স্কুল ছাত্রীকে পিটালেন প্রধান শিক্ষক

যে কারণে স্কুল ছাত্রীকে পিটালেন প্রধান শিক্ষক

যে জন্য সংশোধিত বই পাবে না শিক্ষার্থীরা

যে জন্য সংশোধিত বই পাবে না শিক্ষার্থীরা

কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার বিষয়ে যা জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার বিষয়ে যা জানালেন শিক্ষামন্ত্রী