
২০২৪-০৬-২৯ ১৪:৪৫:১০ / Print
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এপর্যন্ত অপরাজিত দুই দল মুখোমুখি হবে ফাইনালে, র্সর্বোচ্চ ২০ দল নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে টি২০ বিশ্বকাপের নবম আসর। বিশ্বব্যাপী ক্রিকেট ছড়িয়ে দিতে আইসিসির এ প্রয়াস। ঘটন-অঘটন, চমক আর নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে সমাপ্তির পথে ছোট্ট ফরম্যাটের শ্রেষ্ঠত্বের এ আয়োজন। শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি অপরাজিত দুই দল ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দশ বছর পর চূড়ান্ত মঞ্চে পা-রাখা রোহিত শর্মাদের সামনে সতেরো বছরের অপেক্ষার অবসান ঘোচানোর মিশন। ঋষভ পন্থ, জাসপ্রিত বুমরাহ, কুলদীপ যাদবদের নিয়ে গড়া দলটা শুরু থেকে দারুণ ক্রিকেট খেলছে।
গ্রুপ-পর্বে বৃষ্টিতে একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও কোনো ম্যাচেই হারেনি তারা। অন্যদিকে এ পর্যন্ত আট ম্যাচের আটিতেই জিতে যেকোনো ফরম্যাটের বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনালে এইডেন মার্করামের দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের সামনে তাই ইতিহাস গড়ার হাতছানি। শুরুতে আলোচনায় না থাকলেও মূলত দলীয় নৈপুণ্যে ফাইনালে উঠে এসেছে মার্করামের দল। ব্যাট হাতে কখনো কুইন্টন ডি কক, কখনো হেনরিক ক্লাসেন জ্বলে উঠেছেন, বোলিংয়ে এনরিখ নরকিায়, তাবারেজ শামসি। বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায়।
গ্রুপ-পর্বে চার ও সুপার এইটে তিন ম্যাচ জিতে সেমিতে উঠলেও নিশ্চিন্ত ছিল না প্রোটিয়া সমর্থকেরা। কারণ এর আগে ওয়ানডে ও টি২০ বিশ্বকাপ মিলে সাতবার সেরা চার থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল। এবার সেই খড়া কাটিয়ে উঠতে পারে ‘চোকার্স’ খ্যাত দলটি। টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে বোলারদের অসাধারণ নৈপুণ্যে আফগানিস্তানকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে প্রোটিয়ারা। দক্ষিণ আফ্রিকার তিন পেসার ও এক স্পিনারের তোপে প্রথমে ব্যাট হাতে নেমে মাত্র ৫৬ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান। ৫৭ রানের টার্গেট স্পর্শ করতে মাত্র ৮ দশমিক ৫ ওভার খরচ হয় প্রোটিয়াদের।
গ্রুপ পর্ব ও সুপার এইটে প্রায় বেশিরভাগ ম্যাচে অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে পাস করতে হয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কিন্তু সেমিফাইনালে তেমনটা করতে হয়নি তাদের। ‘ফাইনালে খেলার সুযোগ পাওয়া বিশাল অর্জন। আমরা যখন বিশ্বকাপের জন্য আসি, শুধুমাত্র ফাইনালে খেলতে আসিনি। আমরা অন্য সব দলের মতো ফাইনাল জিততে এসেছি।’ বলছিলেন অধিনায়ক মার্করাম। এবারের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ৮টি ও ভারত ৭টি ম্যাচে জিতেছে। যা এই দু’দলের বিশ্বকাপ ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড। গ্রুপ-পর্বে ভারতের একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়।
দ্বিতীয় সেমিফাইনালেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও শতভাগ উজাড় করে দিয়েছে তারা। অধিনায়ক রোহিত শর্মার হাফ-সেঞ্চুরির সাথে সূর্যকুমার যাদবের ঝড়ো ইনিংস এবং দুই স্পিনার অক্ষর প্যাটেল ও কুলদীপ যাদবের ঘূর্ণিতে ইংল্যান্ডকে ৬৮ রানে হারায় ভারত। তৃতীয়বারের মতো টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে ভারত। এর আগে ২০০৭ ও ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিলো উপমহাদেশের দলটি। ২০০৭ সালে প্রথম বিশ্বকাপের শিরোপা জিতলেও, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরে যায় ভারত। আর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম বিশ্বকাপে টান-টান উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো ভারত। ‘আমাদের সামনে ২০০৭ সালের সুখস্মৃতি ফিরিয়ে আনার সুবর্ণ সুযোগ। ১৭ বছর পর টি২০ বিশ্বকাপ ট্রফি জিততে মুখিয়ে আছে দলের সবাই। ঐ আসরের দলে আমি ছিলাম। আশা করছি আবারও শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতে উঠতে পারবো আমরা।’ বলছিলেন অধিনায়ক রোহিত। কেনসিংটন ওভালের এই মাঠে ভারত সুপার এইটে আফগানিস্তানকে হারিয়েছিল ৪৭ রানের বড় ব্যবধানে। দক্ষিণ আফ্রিকা এখনো কোনো ম্যাচ খেলেনি।
তবে গ্রুপ পর্ব থেকে যে আটটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানে হাই-লো স্কোরিং দুটোই ছিল। স্থানীয় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টির শঙ্কা থাকলেও সেটি খেলা বাতিল হয়ে যাওয়ার মতো নয়। এছাড়া ফাইনালের জন্য রবিবার একদিন রিজার্ভ ডে আছে। এখন পর্যন্ত টি২০তে ২৬ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যে ভারতের ১৪ ও দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ১১ ম্যাচে। ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। টি২০ বিশ্বকাপে মোট ৬ বার মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। এই মঞ্চেও জয়ের ক্ষেত্রে এগিয়ে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকার ২ জয়ের বিপরীতে ভারতের জয় ৪টিতে। মুখোমুখি লড়াইয়ের ২০০৭, ২০১০, ২০১২ ও ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে ভারত এবং ২০০৯ ও ২০২২ সালের আসরে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিডি শিক্ষা/জাআ