শিক্ষকের শাসন ছাড়া কমিটি গঠন করে কি নৈতিকতা শেখানো যায়?

মোঃআবু তালেব (সোহাগ) || ২০২১-১০-০৩ ১৭:৪৯:১৫

image
আমি যখন শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিলাম? প্রথমদিন আমার প্রধান শিক্ষক স্যার আমাকে অনেক বিষয়ে দিক নির্দেশনামূলক কথা বলেন, তার বেশির ভাগই হলো, শিক্ষার্থীদের শাসন করা সম্পর্কে ।

শ্রেণি কক্ষে বেত নেয়া যাবে না,শিক্ষার্থীদের মনে আঘাত লাগে এমন কথাও বলা যাবে না। এমন কি কঠোর কোন ভাষায় শাসন ও করা যাবে না। আরো কতো কি?

ঐদিন আমার কাছে মনে হয়েছিল, আমি শিক্ষকতাকে পেশা হিসাবে নিয়ে কি কোনো অপরাধ করলাম?

এখনও মনে পড়ে।আমার ছোট বেলায় আমার বাবা, মা, আমার শিক্ষককে বহুবার বলতে শুনছি হাড্ডিগুলো থাকলেই হবে। আপনি মানুষের মত মানুষ করতে শাসনের কোন ত্রুটি করবেন না।

স্যারদের শাসনের ভয়ে লেখা পড়া,নিয়ম কানুন সহ সব কিছুই আগে আগে শিখে স্কুলে যেতাম। কিন্তু সেই আমি যখন শিক্ষকতায় আসলাম তার উল্টোটা দেখতে পেলাম।

এ দেশের যত উচ্চ শিক্ষিত জ্ঞানী গুণী আছেন সবাই এখনও তার স্কুল জীবনের স্যার দের শাসনের কথা মনের অজান্তেই মাঝে মাঝে বলে ফেলেন। শিক্ষার্থীদের ড্রেস, চুল কাটা সহ বিভিন্ন বিষয়ে এখন শিক্ষকগণ কিছু বলতে পারেন না। এমনকি শ্রেণি কক্ষে বেত নেওয়াও নিষেধ, নির্দেশিকা কাঠি হিসেবে কোন কাগজ মুড়িয়ে তা দিয়ে লাঠির মতো বানানোর নির্দেশনা প্রশিক্ষণে পেয়েছি।

আমার কথা হলো শিক্ষকদেরকে যদি শাসন করতে নিষেধ করা হয়ে থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীদের কি করে লেখা পড়া ও নিয়ম কানুন শিখাবো? স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নৈতিক অবক্ষয় যে ভাবে হচ্ছে তার জন্যও কোন শিক্ষার্থীকে শাসন করা যাচ্ছে না।

এই শাসন ও নৈতিকতা শিক্ষা ছাড়া যে প্রজন্ম সামনের দিনে দেশের নেতৃত্ব দিবে তাদের কাছ থেকে আমরা কি ধরণের সেবা বা আচরণ পেতে পারি?

অনেক অভিভাবক আমাদের কাছে বলেন, স্যার আমার সন্তান আমার কথা শুনে না। সেই শিক্ষার্থীকে যদি শ্রেণি কক্ষে কোন শাসন করা হয়, পরের দিন সেই অভিভাবক এসে শিক্ষককে শাসিয়ে যায়।

অপর দিকে যদি মিডিয়ায় কোন ভাবে আসে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন তাহলেতো চাকরিই থাকছে না। বরং সমাজে মুখ দেখানোই দায়, যেন মস্ত কোন অপরাধের অপরাধী।

মাঝে মাঝে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নোটিশ দেয়া হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা কমিটি, নৈতিকতা কমিটি, শৃঙ্খলা কমিটি সহ নানান ধরনের সামাজিক কমিটি গঠন করার জন্য।

যদি শাসন না থাকে তাহলে আদৌ কি কমিটি গঠন করে নৈতিকতা, সততা,শৃঙ্খলা শেখানো যায়?

লেখকঃ সহকারি শিক্ষক, এইচ.কে.আছমাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয়, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

সম্পাদক ও প্রকাশক - জাফর আহম্মেদ, সম্পাদকের উপদেষ্টা - মোঃ আল হেলাল, আইটি উপদেষ্টা- জরিফ E-mail: bdshikkha.news@gmail.com, Website: www.bd-shikkha.com

বাংলাদেশ শিক্ষা: রোড নং- ০৪, বারিধারা ডিওএইচএস, ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা-১২০৬