সংসদে নির্বাচন কমিশন বিল পাস

বিডিশিক্ষা ডেস্ক || ২০২২-০১-২৭ ১৬:৩২:৩১

image

 

আজ সংসদে প্রধান নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন বিল -২০২২ পাস হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটির সংশোধনী উত্থাপন করেন। পরে বিলটি পাস হয়।

গতকাল বুধবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে বিলটির দুটি ধারায় আংশিক পরিবর্তনের সুপারিশ করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেয়। সংসদের বৈঠকে সুপারিশসহ বিলটির ওপর সংশোধিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার।

এর আগে ১৭ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সংক্রান্ত খসড়া আইনটি নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর গত রোববার সংসদের বৈঠকে তা বিল আকারে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। 

 গতকাল বুধবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়েও এই বিলের সমালোচনা করেন সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দুই সদস্য ফখরুল ইমাম ও ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। 

 সমালোচনা করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। এ ছাড়া সংসদের বাইরেও এ বিলের বিভিন্ন ত্রুটি ও অপূর্ণতা নিয়ে নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন মহল জোরালো বক্তব্য দিয়ে আসছে। সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ইসি গঠন করবেন- এমন নির্দেশনা থাকার পরও দীর্ঘ ৫০ বছরে কোনো সরকারই এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়নি। দেশে ইসি গঠনে প্রথমবারের মতো একটি নতুন আইন হতে যাচ্ছে।

এর আগে রোববার ৭ দিনের সময় দিয়ে বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। কমিটি দুই ঘণ্টার এক বৈঠকে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে।

নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের খসড়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের যোগ্যতা-অযোগ্যতার অংশে দুটি পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। সংসদে উত্থাপিত বিলে সিইসি ও কমিশনারদের যোগ্যতা সংক্রান্ত ৫(গ) ধারায় বলা আছে, সিইসি ও কমিশনার হতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ ধারায় সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা-সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি 'স্বায়ত্তশাসিত ও পেশায়' শব্দ দুটি যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

 অর্থাৎ সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে সার্চ কমিটি এমন কাউকে সুপারিশ করবে, যার কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত পদে বা পেশায় অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা আছে। আর অযোগ্যতার ক্ষেত্রে ৬ (ঘ) ধারায় বলা আছে, নৈতিক স্খলজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ড প্রাপ্ত হলে সিইসি ও কমিশনার হওয়া যাবে না।

 এই ধারায় 'দুই বছরের কারাদণ্ড ' শব্দের পরিবর্তে শুধু কারাদণ্ডের সুপারিশ করেছে কমিটি। অর্থাৎ, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে যে কোনো মেয়াদের সাজা হলেই তিনি সিইসি বা কমিশনার হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।

 এদিকে গতকাল সংসদের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, সরকার দেরিতে হলেও নির্বাচন কমিশন নিয়োগের আইন এনেছে। কিন্তু আইনটি অসম্পূর্ণ এবং এটা সংশোধন করতে হবে। না হলে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।

 জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, একটা আইন নিয়ে এসেছেন। এটা জনগণের দাবি ছিল। এ জন্য ধন্যবাদ। তবে সংবিধানের ৪৮(৩) অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ এই দুটি কাজ রাষ্ট্রপতি করতে পারেন। অন্য সব দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন। একটি নতুন আইন করা হচ্ছে, এখানে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। সংবিধানে ৪৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ দিতে পারেন কি না, তা আমি জানি না। এটা দেখতে হবে। অন্ততপক্ষে এখানে আইনের প্রাধান্য দেওয়া উচিত।

জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ৫০ বছর পরে একটা আইন হওয়ায় সাধুবাদ জানানো যায়। কিন্তু এখানে সংসদের কোনো ভূমিকা রাখা হয়নি। তারা বলেছিলেন, অনুসন্ধান কমিটিতে সরকারি ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব রাখতে। কিন্তু এটা রাখা হয়নি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, এটা রাখা হলে কী সমস্যা হতো। সংসদ সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে আজকের কার্যসূচিতে বিলটি ছিল।


বাংলাদেশ শিক্ষা/এফএ

 

সম্পাদক ও প্রকাশক - জাফর আহম্মেদ, সম্পাদকের উপদেষ্টা - মোঃ আল হেলাল, আইটি উপদেষ্টা- জরিফ E-mail: bdshikkha.news@gmail.com, Website: www.bd-shikkha.com

বাংলাদেশ শিক্ষা: রোড নং- ০৪, বারিধারা ডিওএইচএস, ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা-১২০৬